দেশ থেকে বিদেশে পাড়ি জমান প্রভাসী ভাইয়েরা পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে, পরিবারের সবাইকে ভালো রাখতে আর যদি দেশে ফিরতে হয় লাশ হয়ে সেটা পরিবারের জন্য কত না কষ্টের ।এমনি এক বাংলাদেশি শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি গত ৪ জুলাই সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।এখনো দেশে ফিরেনি লাশ ।জানা গেছে
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছেলের লাশ ফেরত আনতে ভিক্ষায় নেমেছেন এক মা। মাগুরার সন্তান শাহ আলম নামে এক ব্যক্তি গত ৪ জুলাই সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। নিহত হওয়া ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও টাকার অভাবে দেশে আনতে পারেননি ছেলের লাশ।
সৌদির জেদ্দা থেকে ছেলের লাশ দেশে আনতে হলে তাদের গুনতে হবে আড়াই লাখ টাকার মত। তাই উপায়ান্ত না দেখে ভিক্ষায় করছেন মা হুরিয়া বেগম।শাহ আলম মহম্মদপুর উপজেলার দেউলি গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সায়েন উদ্দিন মোল্যার ছেলে। এর আগে নদীভাঙনে ভিটেমাটিসহ সর্বস্ব হারানো শাহ আলমের পরিবারটি।
এরই মধ্যে গত কয়েক দিনে ২১ হাজার টাকার মতো জোগাড় হয়েছে গেছে। তবে বাকি টাকা যোগার না হওয়ায় দিশেহারা হুরিয়া বেগম। এমন পরিস্থিতিতে কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছেননা। শেষবারের মত মৃত সন্তানের মুখ দেখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে মহাচিন্তায় দিন কাটছে তার।
এ বিষয়ে হুরিয়া বেগম জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহম্মদপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে পাঁচ হাজার ৮০০ টাকা সাহায্য পেয়েছি। সব মিলিয়ে গত কয়েক দিনে ২১ হাজার টাকার মতো জোগাড় হয়েছে।
এদিকে দিনমজুর সায়েন উদ্দিন জানান, দারিদ্র্যতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে ছেলে শাহ আলমকে গত বছরের ৯ আগস্ট সৌদি আরবে পাঠান।তিনি বলেন, উপায় না পেয়ে আমার স্ত্রী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাজারঘাটে গিয়ে আর্থিক সাহায্যের জন্য মানুষের কাছে হাত পাতছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মহম্মদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাহায্য সংগ্রহকালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে হুরিয়া বেগম বলেন, কলিজার টুকরার লাশের মুখখানা শেষ দেখার জন্য সরকারের কাছে ও সমাজের বিক্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।
বিষয়টি নিয়ে মহম্মদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিহত শাহ আলমের মা হুরিয়া বেগম আমার কাছে আজ সকালে এসেছিলেন। আমি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। সরকারিভাবে যতটুকু সহযোগিতা আছে সেটি করা হবে।
নিহত শাহ আলম বাবা দিনমজুর সায়েন উদ্দিন বলেন, এনজিও থেকে ঋণ নেয়ার পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ছেলে সৌদিতে পাঠিয়ে ছিলেন। সেখানে পৌঁছে ১০ মাস নির্মাণশ্রমিকের কাজ করলেও কোনো টাকা পাঠাতে পারেননি শাহ আলম।আর এরই মধ্যে শাহ আলম সড়ক দুর্ঘটনায় মারাগেল। এখন তার লাশ আনার খরচ জোগাড় করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর সায়েন উদ্দিনের পরিবার।তবে সরকারি কেন সাহায্য পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।